পানি পান করার আসলেই কি কোনো নিয়ম আছে?

প্রতিদিন খালি পেটে পানি পান স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, নির্দিষ্ট সময় পানি পান করলে উপকার পাওয়া যায়, দাঁড়িয়ে পানি পান করা যাবে না- এমন তথ্যের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কোনো বিশেষ সময়ে পানি পান করলেই উপকার পাওয়া যায় বলে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যা বা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা চর্চায়ও কোথাও দিনের কোনো নির্দিষ্ট সময়ে পানি পানের ব্যাপারে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া নেই।

 

২০১৯ সালে পানি পান নিয়ে এক গবেষণায় জানানো হয়েছে, “দিনের বেলা পানীয় গ্রহণে পর্যাপ্ত পরিমাণ হাইড্রেশনে অতিরিক্ত প্রভাব ফেলতে পারে। দিনের কোনো সঠিক সময়ে পানি পান করা উচিত তাই নিয়ে কিছু মিথ উঠে আসছে। যদিও এর সপক্ষে যুক্তি খুবই সীমিত।

 

এই ধরনের দাবিগুলির সঙ্গে অনেক সময়ই আয়ুর্বেদকে অকারণে জড়ানো হয়। অমৃতা সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আয়ুর্বেদার রিসার্চ ডিরেক্টর ডা. পি. রামমনোহর বলেন, “আয়ুর্বেদ অনুযায়ী তৃষ্ণা হচ্ছে একটি বেগ বা স্বাভাবিক অভিব্যক্তি। নিয়ম হল যখনই কেউ তৃষ্ণা অনুভব করবে তখনই তাকে পানি পান করতে হবে। তৃষ্ণাকে অবহেলা করা উচিত নয়। গ্রীষ্মকাল বা শরৎকালে যখন খুব গরম থাকে আর ঘাম হয় তার বাইরে একসঙ্গে খুব বেশি পরিমাণে পানি পান করতে আয়ুর্বেদে পরামর্শ দেওয়া হয় না। ওই দুটি ঋতুতে ঘাম বেশি হওয়ার কারণে শরীরকে তাজা রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্য ঋতুতে যখন কেউ তৃষ্ণার্ত বোধ করবে তখন পানি পান করতে হবে এবং তা সারাদিন ধরে অল্প অল্প করে। আয়ুর্বেদে পানি পানের জন্য কোনো বিশেষ সময়ের পরামর্শ দেওয়া নেই।”

 

পানি পানের কোনো বিশেষ ভঙ্গির বিষয়েও কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। আয়ুর্বেদেও এ সম্পর্কে কোনো পরামর্শের কথা বলা নেই। ডা. রামমনোহার বলেছেন, “গলায় যাতে আটকে না যায় তার জন্য আয়ুর্বেদে বসে খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পানি কীভাবে পান করতে হবে তার কোনো পরামর্শ দেওয়া হয়নি। কিন্তু এটা সাধারণ জ্ঞান যে তাড়াহুড়ো করে পানি পান উচিত নয় বা খুব দ্রুত অনেকটা পানি পান উচিত নয় বা কোনো ভুলভাল ভঙ্গিতে পানি পান উচিত নয়। এ ধরনের কিছুতে চোকিং বা গলায় আটকে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে।”

 

একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করা উচিত তা নিয়ে একাধিক বিতর্ক রয়েছে এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে। নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক আর্টিকেল অনুযায়ী, “একজন মানুষের কতোটা তরল প্রয়োজন তা নির্ভর করে বয়স, বছরের সময়, জলবায়ুর পরিস্থিতি, খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের ওপর, তাই এ সম্পর্কে কোনো DRV (ডায়েটারি রেফারেন্স ভ্যালু) বেঁধে দেওয়া কঠিন।”  সূএ: বাংলাদেশ  প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ধমক দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করতে চাইলে বিএনপি সহ্য করবে না : ফারুক

» পিআর ইস্যুতে যা বললেন মঈন খান

» ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

» আসিফের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দেশের স্বার্থে বন্দর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

» বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৩৫৩ জন গ্রেফতার

» হজ শেষে ফিরেছেন ৬০ হাজার ৫১৩ হাজি

» জামালপুরে নারী এগিয়ে চলা প্রকল্পের সভা অনুষ্ঠিত

» জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে  মোরেলগঞ্জে বিএনপির বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি

» ইসলামপুরে রহিম মেম্বার হত্যা সন্দেহে দুইজন আটক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পানি পান করার আসলেই কি কোনো নিয়ম আছে?

প্রতিদিন খালি পেটে পানি পান স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, নির্দিষ্ট সময় পানি পান করলে উপকার পাওয়া যায়, দাঁড়িয়ে পানি পান করা যাবে না- এমন তথ্যের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কোনো বিশেষ সময়ে পানি পান করলেই উপকার পাওয়া যায় বলে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যা বা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা চর্চায়ও কোথাও দিনের কোনো নির্দিষ্ট সময়ে পানি পানের ব্যাপারে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া নেই।

 

২০১৯ সালে পানি পান নিয়ে এক গবেষণায় জানানো হয়েছে, “দিনের বেলা পানীয় গ্রহণে পর্যাপ্ত পরিমাণ হাইড্রেশনে অতিরিক্ত প্রভাব ফেলতে পারে। দিনের কোনো সঠিক সময়ে পানি পান করা উচিত তাই নিয়ে কিছু মিথ উঠে আসছে। যদিও এর সপক্ষে যুক্তি খুবই সীমিত।

 

এই ধরনের দাবিগুলির সঙ্গে অনেক সময়ই আয়ুর্বেদকে অকারণে জড়ানো হয়। অমৃতা সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আয়ুর্বেদার রিসার্চ ডিরেক্টর ডা. পি. রামমনোহর বলেন, “আয়ুর্বেদ অনুযায়ী তৃষ্ণা হচ্ছে একটি বেগ বা স্বাভাবিক অভিব্যক্তি। নিয়ম হল যখনই কেউ তৃষ্ণা অনুভব করবে তখনই তাকে পানি পান করতে হবে। তৃষ্ণাকে অবহেলা করা উচিত নয়। গ্রীষ্মকাল বা শরৎকালে যখন খুব গরম থাকে আর ঘাম হয় তার বাইরে একসঙ্গে খুব বেশি পরিমাণে পানি পান করতে আয়ুর্বেদে পরামর্শ দেওয়া হয় না। ওই দুটি ঋতুতে ঘাম বেশি হওয়ার কারণে শরীরকে তাজা রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্য ঋতুতে যখন কেউ তৃষ্ণার্ত বোধ করবে তখন পানি পান করতে হবে এবং তা সারাদিন ধরে অল্প অল্প করে। আয়ুর্বেদে পানি পানের জন্য কোনো বিশেষ সময়ের পরামর্শ দেওয়া নেই।”

 

পানি পানের কোনো বিশেষ ভঙ্গির বিষয়েও কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। আয়ুর্বেদেও এ সম্পর্কে কোনো পরামর্শের কথা বলা নেই। ডা. রামমনোহার বলেছেন, “গলায় যাতে আটকে না যায় তার জন্য আয়ুর্বেদে বসে খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পানি কীভাবে পান করতে হবে তার কোনো পরামর্শ দেওয়া হয়নি। কিন্তু এটা সাধারণ জ্ঞান যে তাড়াহুড়ো করে পানি পান উচিত নয় বা খুব দ্রুত অনেকটা পানি পান উচিত নয় বা কোনো ভুলভাল ভঙ্গিতে পানি পান উচিত নয়। এ ধরনের কিছুতে চোকিং বা গলায় আটকে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে।”

 

একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করা উচিত তা নিয়ে একাধিক বিতর্ক রয়েছে এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে। নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক আর্টিকেল অনুযায়ী, “একজন মানুষের কতোটা তরল প্রয়োজন তা নির্ভর করে বয়স, বছরের সময়, জলবায়ুর পরিস্থিতি, খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের ওপর, তাই এ সম্পর্কে কোনো DRV (ডায়েটারি রেফারেন্স ভ্যালু) বেঁধে দেওয়া কঠিন।”  সূএ: বাংলাদেশ  প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com